সোডিয়ামের প্রতীক Na
সোডিয়ামের পারমানবিক সংখ্যা ১১
সোডিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস
পর্যায় সারণিতে সোডিয়ামের অবস্থান :
পর্যায় ৩ এবং গ্রুপ ১ (1A)
সোডিয়ামের ভৌত ধর্ম :
এটি জলের তুলনায় হালকা এবং Na ধাতু অনেক নরম ফলে ছুরি দিয়ে কাটা যায়। Na উজ্জ্বল ধাতু।
সোডিয়ামের রাসায়নিক ধর্ম :
সোডিয়াম (Na) খুব সহজে একটি ইলেকট্রন বর্জন করে Na+ আয়নে পরিনত হয়। Na একযোজী এবং শক্তিশালী বিজারক। Na সর্বদা আয়ণিক যৌগ গঠন করে।
সোডিয়ামের বিক্রিয়া :
1. পানির সাথে সোডিয়ামের বিক্রিয়া : সোডিয়াম ধাতু পানির সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড (NaOH) ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে।
২. বাতাসের সাথে সোডিয়ামের বিক্রিয়া : সোডিয়াম আর্দ্র বাতাসের সংস্পর্শে অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম অক্সাইড উৎপন্ন করে।
উৎপন্ন সোডিয়াম অক্সাইড বাতাসের জলীয় বাষ্পের সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড (NaOH) উৎপন্ন করে।
এই সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড বাতাসের সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম কার্বনেট উৎপন্ন করে।
৩. হাইড্রোজেনের সাথে সোডিয়ামের বিক্রিয়া :
সোডিয়াম কে হাইড্রোজেন গ্যাসে উত্তপ্ত করলে সোডিয়াম হাইড্রাইড (NaH) উৎপন্ন করে।
৪. হ্যালোজেন সমূহের সাথে সোডিয়ামের বিক্রিয়া :
হ্যালোজেন মৌল সমূহ হচ্ছে ফ্লোরিণ (F), ক্লোরিণ(Cl), ব্রোমিন (Br), আয়োডিন (I)
হ্যালোজেন সমূহের বাষ্পে সোডিয়াম ধাতু কে উত্তপ্ত করলে সোডিয়াম হ্যালাইড সমূহ উৎপন্ন হয়। সাধারণ তাপমাত্রায় এই বিক্রিয়া ধীর গতি সম্পন্ন।
৫। এসিডের সাথে সোডিয়ামের বিক্রিয়া :
সোডিয়াম জারণ ধর্মীহীন লঘু এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে।
সোডিয়াম ধাতু কে কেরোসিনের নিচে রাখা হয় কেন?
সোডিয়াম ধাতু অত্যন্ত ক্রিয়াশীল। Na কে ফাকা জায়গায় রেখে দিলে বাতাসের জলীয় বাষ্পের সাথে বিক্রিয়া করে। আবার Na কে পানির পাত্রে রেখে দিলে পানির সাথে বিক্রিয়া করে ক্ষার উৎপন্ন করে। এই সময়ে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়। তাই সোডিয়াম কে (Na) নিষ্কীয়ভাবে রাখার জন্য কেরোসিনের নিচে রাখা হয়।
শিখা পরীক্ষার মাধ্যমে সোডিয়াম আয়ণ শনাক্তকরণ প্রকৃয়া :
বিভিন্ন ক্যাটায়ন বিভিন্ন বিকারকের সাথে বিক্রিয়া করে বিভিন্ন বর্ণের বা ধরনের অধঃক্ষেপ বা গ্যাস সৃষ্টি করে থাকে। তাদের বর্ণ, গন্ধ প্রভৃতি পর্যবেক্ষণ করে অজ্ঞতা নমুনায় বিভিন্ন ক্যাটায়ন শনাক্ত করা যায়। তদ্রূপ ভাবে সোডিয়াম আয়নের ও শনাক্ত করা যায়। পরীক্ষাগারে এপ্রন ও নিরাপদ চশমা ব্যবহার করতে হবে।
পরীক্ষার যন্ত্রপাতিঃ পরীক্ষানল, কাচদন্ড, নাইক্রোম তার ( কাচদন্ডে সংযুক্ত) , ওয়াচগ্লাস ও বুনসেন দীপ।
পরীক্ষা পদ্ধতি: একটি ওয়াচ গ্লাসে গাঢ় HCl নিয়ে কাচদন্ডের সাথে যুক্ত একটি নাইক্রোমের তারের মধ্যে ডুবানো হয়। তারপর বুনসেন দীপের অনুজ্জ্বল শিখায় উত্তপ্ত করে পরিষ্কার করা হয়। এর পর নাইক্রোমের তারকে গাঢ় HCl এ ডুবিয়ে নমুনা লবণে স্পর্শ করে কিছু নমুনা লবণ তার সাথে লাগানো হয়। লবণসহ তারটিকে বুনসেন দীপের অনুজ্জ্বল শিখায় স্পর্শ করা হয়। তারপর দীপ শিখার বর্ণ সরাসরি এবং নীল কাচের মধ্যে দিয়ে লক্ষ করতে হবে। যদি সোনালী হলুদ বর্ণ সৃষ্টি হয় এবং নীল কাচের মধ্য দিয়ে লক্ষ্য করলে বর্ণহীন দেখায় তাহলে বুঝতে হবে সোডিয়াম আয়ণ উপস্থিত আছে। যদি অন্য কোনো বর্ণ দেখায় তাহলে বুঝতে হবে সোডিয়াম আয়ণ উপস্থিত নেই।
সোডিয়াম ধাতুর ব্যবহার :
▪️ জিরকোনিয়াম, টাংস্টেন, টাইটেনিয়াম ইত্যাদি দুষ্প্রাপ্য ধাতু নিষ্কাশনে অতি শক্তিশালী বিজারক রূপে সোডিয়াম (Na) ধাতু ব্যবহৃত হয়।
▪️ জৈব যৌগে সালফার ও হ্যালোজেন সমূহ কে শনাক্ত করতে সোডিয়াম (Na) ধাতু ব্যবহার হয়।
▪️পেট্রোল এন্টিনক টেট্রা- ইথাইল লেড প্রস্তুতি তে লেড এর সাথে সংকর হিসাবে সোডিয়াম (Na) ধাতু ব্যবহৃত হয়।
▪️ সোডিয়াম পার অক্সাইড, সোডামাইড, সোডিয়াম সায়ানাইড প্রভৃতি ক্রিয়াশীল যৌগ প্রস্তুতি তে সোডিয়াম ধাতু ব্যবহৃত হয়।
▪️ রাস্তায় হলুদ রঙের বাতিতে সোডিয়াম বাষ্প আছে।

nice
ReplyDelete