1.কোষ কী?
⚫ জীবদেহের গঠন ও কাজের একক কে কোষ বলে।
2. কোষ বিভাজন কাকে বলে?
⚫যে প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃকোষ বিভাজিত হয়ে একাধিক অপত্য কোষ সৃষ্টি হয় তাকে কোষ বিভাজন বলা হয়।
#জীবদেহে তিন ধরনের কোষ বিভাজন দেখা যায়। যথাঃ
ক.অ্যামাইটোসিস কোষবিভাজন।
খ. মাইটোসিস কোষবিভাজন।
গ. মিয়োসিস কোষবিভাজন।
3. অ্যামাইটোসিস কোষবিভাজন কাকে বলে?
⚫ যে কোষবিভাজনে মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইট্রোপ্লাজম সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুইটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাকে অ্যামাইটোসিস কোষবিভাজন বলে।
4. কোন কোন জীবের ক্ষেত্রে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন হয়?
⚫ ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট, অ্যামিবা, ছত্রাক ইত্যাদি এককোষী জীবে হয়।
5. অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনের অপর নাম কি?
⚫ প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন।
6.ব্যাকটেরিয়ার* কোষবিভাজন কে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলা হয় কেন?
(*** ছত্রাক, ইস্ট, অ্যামিবা)
⚫ ব্যাকটেরিয়া* অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন হয়।
যে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইট্রোপ্লাজম সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুইটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাকে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলা হয়। অ্যামাইটোসিস বিভাজনের ক্ষেত্রে ঠিক এ ঘটনা ঘটে। নিউক্লিয়াস মাঝ বরাবর সংকুচিত হয়ে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুইটি অপত্য নিউক্লিয়াস গঠিত হয়। এর সাথে সাথে সাইট্রোপ্লাজম ও সংকুচিত হয়ে দুইটি অপত্য কোষে পরিনত হয়। এই জন্য ব্যাকটেরিয়ায়* সংঘটিত বিভাজনকে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলা হয়।
7. অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া টি ব্যাখ্যা কর।
⚫ যে প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃকোষ নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম সরাসরি বিরক্ত হয়ে দুইটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাকে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন বলা হয়। এই ধরনের কোষ বিভাজনে নিউক্লিয়াসটি ডাম্বেল আকার ধারণ করে এবং প্রায় মাঝ বরাবর সংকুচিত হয়। ক্রমশ সংকোচিত হতে হতে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়। এই সময় সাইটোপ্লাজম ও মাঝ বরাবর সংকুচিত হয় দুটি অপত্য কোষে পরিণত হয়।
8. মাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে?
⚫যে প্রক্রিয়ায় মাতৃ কোষের নিউক্লিয়াস একবার বিভাজিত হয়ে সম আকৃতির, সমগুন সম্পন্ন ও সমসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট দুইটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাকে মাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে।
9. মাইটোসিস কোষ বিভাজন এর অপর নাম কি?
⚫ইকুয়েশনাল বা সমীকরণিক বিভাজন
10. মাইটোসিস কে সমীকরণিক বিভাজন বলা হয় কেন?
⚫ মাইটোসিস কোষ বিভাজনের প্রতিটি ক্রোমোজোম লম্বালম্বিভাবে দুই ভাগে বিভক্ত হয় ফলে সৃষ্ট নতুন কোষ দুইটি তে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান থাকে তাই মাইটোসিস কে ইকুয়েশনাল বা সমীকরণিক বিভাজন বলা হয়।
11. মাইটোসিস কোষ বিভাজন এর বৈশিষ্ট্য লেখ।
⚫ ১.মাইটোসিস কোষ বিভাজন দেহ কোষের এক ধরনের বিভাজন পদ্ধতি
২. মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসটি একবার বিভাজিত হয়
৩.সম গুণ সম্পন্ন দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়। ৪.ক্রোমোজোম সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকে। ৫.কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোম লম্বালম্বিভাবে দুই ভাগে বিভক্ত হয়।
12. মাইটোসিস কোষ বিভাজন কোথায় হয়? ⚫প্রকৃত নিউক্লিয়াস যুক্ত জীবের দেহ কোষে ঘটে যেমন কান্ড, ভ্রুণমুকুল, ভ্রুণ,মুকুল ইত্যাদি
13. মাইটোসিস কোষ বিভাজন কতটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়?
⚫ দুইটি পর্যায়।যথাঃ
১. ক্যারিওকাইনেসিসঃ কোষের নিউক্লিয়াসের বিভাজন কে ক্যারিওকাইনেসিস বলে।
২. সাইটোকাইনেসিসঃ কোষের সাইটোপ্লাজমের বিভাজন কে সাইটোকাইনেসিস বলে।
14. ইন্টারফেজ কী?
⚫ ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিস শুরু হওয়ার আগে কোষের নিউক্লিয়াসের কিছু প্রস্তুতি মুলক কাজ করতে হয়। কোষের এই অবস্থা কে ইন্টারফেজ বলা হয়।
15. ক্যারিওকাইনেসিস এর ধাপ সমূহ কী কী ? বর্ণনা কর।
⚫১.প্রোফেজ ২. প্রো-মেটাফেজ ৩. মেটাফেজ ৪.অ্যানাফেজ, ৫. টেলোফেজ।
♦️প্রোফেজঃ
@ মাইটোসিস কোষ বিভাজনের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ধাপ।
@কোষের নিউক্লিয়াস বড় আকারের হয়
@ পানি বিয়োজনের ফলে নিউক্লিয়ার জালিকা ভেঙে গিয়ে আঁকাবাঁকা সুতার মতো অংশের সৃষ্টি হয়। ক্রোমোজম বিভক্ত হয়ে দুইটি ক্রোমাটিড গঠন করে। এগুলো সেন্ট্রোমিয়ার নামক একটি বিন্দুতে যুক্ত থাকে।
♦️প্রো-মেটাফেজঃ
@ এটি স্বল্পস্থায়ী ধাপ
@দুই মেরু বিশিষ্ট মাকু আকৃতি স্পিন্ডল যন্ত্র সৃষ্টি হয়। পানি কোষে সেন্ট্রিওল দুইটির চার দিক থেকে রশির মত অ্যাসটার রশ্মির আবির্ভাব ঘটে কোষের দুটি বিপরীত মেরুতে পৌঁছাতে স্পিন্ডল তন্তু গঠন করে তন্তুগুলো পরস্পর যুক্ত হয় স্পিন্ডল যন্ত্র গঠন করে।
♦️ মেটাফেজ;
@ ক্রোমোজম গুলো স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে আসে এবং সেন্টোমিয়ারের সাথে তন্তু দিয়ে আটকে থাকে।
@ এ ধাপে ক্রোমোজম গুলো সবচেয়ে খাটো ও মোটা হয়
♦️অ্যানাফেজঃ
@ ক্রোমোজমের সেন্ট্রোমিয়ার দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।
@ ক্রোমাটিড গুলো পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
@ অপত্য ক্রোমোজমের অর্ধেক উত্তর মেরুর দিখে আর বাকি অর্ধেক দক্ষিণ মেরুর দিখে অগ্রসর হয়ে থাকে। এই সময় ক্রোমোজম গুলো ইংরেজি বর্নমালা V, L,J অথবা I আকৃতি বিশিষ্ট হয়।
♦️টেলোফেজঃ
@ অপত্য ক্রোমোজম গুলো বিপরীত মেরুতে এসে পৌঁছায়।
@ নিউক্লিয়াসের পুনঃআবির্ভাব ঘটে।
@ প্রাণি কোষের উভয় মেরুতে একটি করে সেন্ট্রিওল সৃষ্টি হয়।
@ক্রোমোজম গুলো সরু ও লম্বা আকার ধারণ করে পরস্পরের সাথে জট পাকিয়ে নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম গঠন করে। এইভাবে অপত্য নিউক্লিয়াস গঠিত হয়।
16. মাইটোসিস কোষবিভাজনের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
⚫পৃথিবীতে লক্ষ্য লক্ষ্য প্রজাতির প্রাণি বসবাস করে থাকে। এদের মধ্যে কিছু কিছু প্রাণি এক কোষী আবার কিছু কিছু প্রাণি বহু কোষী হয়ে থাকে। সমস্ত বহুকোষী প্রাণি জাইগোট নামক একটি মাত্র কোষ থেকে সুচনা হয়। পরবর্তীতে কোষবিভাজিত হতে হতে লক্ষ্য কোটি কোষের সমন্বয়ে বহুকোষী জীবদেহ গঠিত হয়। মাইটোসিস কোষবিভাজন এর মাধ্যমে বহুকোষী জীবদেহ গঠিত হয়। মাইটোসিস প্রক্রিয়াটি সঠিক ভাবে না ঘটলে জীবদেহ গঠিত ও দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হবে। মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজনের কারনে প্রতিটি কোষের নিউক্লিয়াস ও সাইট্রোপ্লাজমের ভারসাম্য রক্ষা পায়। এই বিভাজন সঠিক ভাবে না ঘটলে এ ভারসাম্য বিনষ্ট হতে পারে। মাইটোসিসের কারণে জীবদেহের সকল কোষের ক্রোমোজম সংখ্যা সমান থাকে। মাইটোসিস কোষবিভাজনের ফলে অপত্য কোষ সমআকৃতির সমগুন সম্পন্ন হয়ে থাকে। তাই মাইটোসিস কোষবিভাজন না হলে কোষের আকার, আকৃতি, আয়তন, বৈশিষ্ট বিঘ্ন ঘটবে। তাই প্রাণি জগতের অস্তিত্ব রক্ষার্থে মাইটোসিস কোষবিভাজনের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
17.মিয়োসিস কোষবিভাজন কাকে বলে?
⚫ যে কোষবিভাজন প্রক্রিয়ায় মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস পরপর দুইবার বিভাজিত হয় এবং ক্রোমোজম একবার বিভাজিত হয় এবং অপত্য কোষের ক্রোমোজম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোমের অর্ধেক হয় তাকে মিয়োসিস কোষবিভাজন বলে।
18.মিয়োসিস কোষ বিভাজনের অপর নাম কি?
⚫হ্রাসমূলক বিভাজন।
19. মিয়োসিস কোষবিভাজন কে হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয় কেন?
⚫ মিয়োসিস কোষবিভাজনে মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসটি পরপর দুইবার বিভাজিত হলেও ক্রোমোজম একবার বিভাজিত হয়। ফলে অপত্য কোষের ক্রোমোজম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে যায়। মিয়োসিস কোষবিভাজনে ক্রোমোজোম সংখ্যা অর্ধেক হ্রাস পায় বলে একে হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয়।
20. মিয়োসিস কোষবিভাজন কোথায় ঘটে?
⚫জনন মাতৃকোষে ঘটে। সপুস্পক উদ্ভিদের পরাগধানী ও ডিম্বকে। উন্নত প্রাণির দেহে শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয় এর মধ্যে মিয়োসিস কোষবিভাজন হয়।
21.মিয়োসিস কোষবিভাজনের বৈশিষ্ট্য লেখ।
⚫@ ডিপ্লয়েড জীবের জনন মাতৃকোষ ও হ্যাপ্লয়েড জীবের জাইগোটে মিয়োসিস ঘটে
@একটি কোষ থেকে চারটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়।
@ক্রোমোজোম একবার এবং নিউক্লিয়াস দুইবার বিভাজিত হয়।
@ অপত্য কোষের ক্রোমোজম সংখ্যা মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়।
22. মিয়োসিস কোষবিভাজন প্রক্রিয়া বর্ণনা কর।
⚫মাতৃকোষ দুই ধাপে বিভাজিত হয়ে থাকে।যথাঃ ক. মিয়োসিস-১ ও মিয়োসিস-২।
মিয়োসিস-১ এ দুইটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়। এই অপত্য কোষের ক্রোমোজম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে থাকে।
মিয়োসিস-২ এ সংঘটিত বিভাজনটি মাইটোসিস কোষবিভাজনের অনুরূপ। প্রথম বিভাজনে উৎপন্ন প্রতিটি কোষ পুনরায় বিভাজিত হয়ে দুইটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে। এ ক্ষেত্রে অপত্য কোষের ক্রোমোজম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজম সংখ্যার সমান হয়। ফলে একটি কোষ থেকে চারটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়।
nice content want more.
ReplyDeleteNice content
ReplyDelete